সংবাদ শিরোনাম :
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ৮ম চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ৬ষ্ঠ চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত জালালাবাদ এসোসিয়েশনের পঞ্চম চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত জালালাবাদ এসোসিয়েশনের চতুর্থ চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত জালালাবাদ এসোসিয়েশনের তৃতীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত জালালাবাদ এসোসিয়েশনের দ্বিতীয় চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত জালালাবাদ এসোসিয়েশন, ঢাকা’র পুনর্বাসন কার্যক্রমে সায়হাম গ্রুপের ১০ লক্ষ টাকা অনুদান জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ত্রাণ বিতরণ আবুল মাল আব্দুল মুহিতের মৃত্যুতে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের শোক বিশ্বময় জালালাবাদ সম্প্রীতির বন্ধন

আমাদের সিলেট

সিলেট একটি  বিভাগ নাম। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত একটি প্রশাসনিক অঞ্চল, যা হবিগঞ্জমৌলভীবাজারসুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলা নিয়ে গঠিত। পৌরাণিক যুগে এই অঞ্চল প্রাচীন কামরূপ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ঐ যুগে সিলেটের লাউড় পর্বতে কামরুপ রাজ্যের উপরাজধানী ছিল বলে জানা যায়। ধারণা করা হয় প্রাচীনকালে দ্রাবিড়, মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠী এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের পর জয়ন্তীয়া, লাউড় ও গৌড় নামে তিনটি স্বতন্ত্র রাজ্যে সিলেট বিভক্ত ছিল। প্রাচীন গৌড় রাজ্যই বর্তমান (বিভাগীয় শহর) সিলেট অঞ্চল বলে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। দশম শতাব্দিতে এ অঞ্চলের কিছু অংশ বিক্রমপুরের চন্দ্রবংশীয় রাজাদের দ্বারা শাসিত হয় বলে জানা যায়। ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বঙ্গ বিজয়ের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চল মুসলমানদের দ্বারা অধিকৃত হয় এবং ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে দরবেশ শাহ জালাল [রহ.] দ্বারা গৌড় রাজ্য বিজিত হলে, দিল্লীর সুলতানদের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন আউলিয়া শাহজালালের নামের সাথে মিল রেখে গৌড় নামের পরিবর্তে ইহার নামকরণ করা হয় জালালাবাদ । অতঃপর ১৫৭৫ সালে শক্তিশালী মোগল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হলে ভৌগোলিক সীমারেখায় এ অঞ্চলের অনেক পরিবর্তন ঘটে। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে সিলেট বিভাগ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর দখলে আসে। ১৭৭২ সালে (ভারতের অধীনে চলে যাওয়া সাড়ে তিন থানা নিয়ে) গঠিত হয় (সাবেক) সিলেট জেলা। সেসময় এর আয়তন ছিল ৫,৪৪০ বর্গমাইল। ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে এই অঞ্চল আসাম প্রদেশে যুক্ত হয়। ১৯৪৭ এর আগ পর্যন্ত (১৯০৫-১৯১১ পর্যন্ত বঙ্গভঙ্গ সময়ের কালটুকু বাদ দিয়ে) সিলেট আসামের অংশ ছিল। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে গণভোটের মাধ্যমে এই অঞ্চল পাকিস্তান রাষ্ট্রের অধীন হয়ে বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হলেও এর কিছু অংশ ভারত অধিকৃত করিমগঞ্জ, পাথারকান্দি, বদরপুর ইত্যাদি অঞ্চল সিলেট থেকে বিচ্যুত হয়ে আসামের সাথে ভারতে চলে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর স্বাধীন বাংলাদেশে সাবেক সিলেট জেলা ছিল চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত। পরবর্তিতে ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১ আগস্ট চারটি জেলা নিয়ে বাংলাদেশের ষষ্ঠ বিভাগ ঘোষিত হয়। এই বিভাগের মোট আয়তন ১২,৫৯৫.৯৫ বর্গ কিলোমিটার অবস্থান: ২৩°৫৮´ থেকে ২৫°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৬´ থেকে ৯২°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য, পশ্চিমে নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলা। জনসংখ্যা ৮১০৭৭৬৬; পুরুষ ৫০.৬৭%, মহিলা ৪৯.৩৩%। মুসলিম ৮১%, হিন্দু ১৭.৮০%, বৌদ্ধ ০.০২%, খ্রিস্টান ০.০৬% এবং অন্যান্য ১.১২%। জলাশয় প্রধান নদী: সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই ও মনু। প্রশাসন  সিলেট বিভাগ গঠিত হয় ১ আগস্ট ১৯৯৫ সালে। ২০০২ সালে ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশন গঠিত হয়।

বিভাগ
আয়তন (বর্গ কিমি) সিটিকর্পোরেশন জেলা উপজেলা পৌরসভা ওয়ার্ড ইউনিয়ন জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
১২,২৯৮.৪ ৩৮ ১৯ ৩৩৪ ১৭১ ৯৯২৫৩৮ ৭১১৫২২৮ ৬৪৩.২৫ ৪০.০৯

অন্যান্য তথ্য
জেলা নাম আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ওয়ার্ড মহল্লা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
মৌলভীবাজার ৫৮ ২৬০১.৮৪ ৪৫ ১২২ ৬৭ ৯১৭ ২১৩৪ ১৭৮০৭৯৭ ৬২৫ ৪২.৬৬
হবিগঞ্জ ৩৬ ২৫৩৬.৫৮ ৫৪ ১২৪ ৭৭ ১২৮৯ ২০৭৬ ১৭৫৭৬৬৫ ৬৬৭ ৩৭.৭২
সিলেট ৯১ ৩৪৯০.৪০ ১২ ৩৬ ১৭০ ১০৮ ১৬৯৩ ৩২২৫ ২৫৫৫৫৬৬ ৭৩২ ৪৫.৫৯
সুনামগঞ্জ ৯০ ৩৬৬৯.৫৮ ১১ ৩৬ ১৩৮ ৮২ ১৬৮৮ ২৭৮২ ২০১৩৭৩৮ ৫৪৯ ৩৪.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৭৫২৪, মন্দির ১০৭০, গির্জা ৬৫, তীর্থস্থান ২, প্যাগোডা ৯, মাযার ৫০। শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.০৯%; পুরুষ ৪৩.৭২%, মহিলা ৩৬.০৪%। বিশ্ববিদ্যালয় ৬, চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ৪, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ৫, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ৫, কলেজ ১২৯, আইন কলেজ ২, সংস্কৃত কলেজ ১, ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭৮০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৭২৬, কমিউনিটি স্কুল ৮৮, সঙ্গীত বিদ্যালয় ৮, স্যাটেলাইট স্কুল ২০৮, মাদ্রাসা ৫২২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, লিডিং ইউনিভার্সিটি, এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, এম.সি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ (১৯৫৬), শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজ, হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ (১৯৪৪), সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৫), কাশীনাথ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, বি টি আর আই হাইস্কুল এন্ড কলেজ, হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৭)। জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫১.৩৪%, অকৃষি শ্রমিক ৮.৫২%, শিল্প ১.৫৬%, ব্যবসা ১১.৮২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১৩%, নির্মাণ ১.৪১%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৩%, চাকরি ৫.৬৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৫.১৬% এবং অন্যান্য ১১.৯৬%। স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ও ক্লিনিক ৬২, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩৬, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮৬, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ৩, মাতৃমঙ্গল ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ৬, মিশন হাসপাতাল ৪, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩৮, পশু হাসপাতাল ১২।  তথ্যসূত্র   আদমশুমারী সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..